চট্টগ্রামে ভুয়া সচিব গ্রেপ্তার

ভিজিটিং কার্ড এডিট করে নাম পদবী ঠিক রেখে কার্ডের নিচে থাকা মোবাইল নম্বর ও ইমেইল আইডি মুছে ফেলে নিজের ফোন নম্বর ও ইমেইল আইডি দিয়ে বানিয়ে নেন উপসচিবের কার্ড। সচিব পরিচয়ে বিভিন্ন বাহিনীতে চাকরি দেওয়া থেকে শুরু করে স্কুলে ভর্তি, ব্যবসায়ীর কাছে মালামাল কেনার নামে আত্মসাৎ, এমন কোনো প্রতারণা বাদ দেননি তিনি। আবার পুলিশি ঝামেলা এড়াতে নিজেকে ক্ষেত্র বিশেষে পরিচয় দেন ২৫তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডার অথবা সাংবাদিক।

এমনই এক প্রতারককে আজ সোমবার গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানা পুলিশ। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিবের ভুয়া ভিজিটিং কার্ড ও ‘চ্যানেল এস টিভি’-এর সাংবাদিকের ভুয়া ভিজিটিং কার্ড।

গ্রেপ্তারকৃত মো. মোজাম্মেল হক (৪৩) চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার চরলক্ষ্যার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী আব্দুল হকের ছেলে।

স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সিল-সই জালিয়াতি করে তিনি ধরা পড়েছেন পুলিশের হাতে।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সে একজন সুচতুর প্রতারক। নিজেকে কখনো বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তা আবার কখনো উপসচিব বা সাংবাদিক পরিচয় দেয়। পরে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।’

ওসি নেজাম আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে করোনায় মারা যাওয়া একজনের স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা ও মৃত ব্যক্তির বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেয় সে। আলাপচারিতায় পরিবারের অবস্থা কেমন চলছে জানতে চাইলে ওই নারী তাকে জানান যে, তার ছেলে সরকারি মুসলিম হাইস্কুলে লটারিতে ভর্তি হতে পারেনি।’

‘এর দুই-তিন দিন পর সেই নারীকে আবার ফোন করে মোজাম্মেল জানায়, ভর্তির ব্যবস্থা করা যাবে। তবে কিছু টাকা লাগবে। পরে সে ঐ নারীকে গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে কোতোয়ালী থানার লালদিঘী জেলা পরিষদ মার্কেটের ইউসিবি ব্যাংকের এটিএম বুথের সামনে আসতে বলে এবং সেখানে গেলে তাকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিল ও সইযুক্ত আবেদনপত্র ধরিয়ে দিয়ে ১৬ হাজার টাকা নিয়ে নেয়,’ বলেন ওসি।

স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক এই ধরণের কাগজের কথা তার জানা নেই বলে জানালে ওই নারী জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে আসেন এবং প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে থানায় মামলা করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

ওসি নেজাম জানান, এর আগে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নৌবাহিনীর কমান্ডার পরিচয় দিয়ে নৌবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে সে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মালামাল কিনে পরবর্তীতে টাকা পরিশোধ না করে তা আত্মসাৎ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *