ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক আজ, গুরুত্ব পাবে রোহিঙ্গা ইস্যু
ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আজ শুক্রবার নাইজারে একত্র হওয়ার কথা রয়েছে। ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই বৈঠকের শীর্ষ অ্যাজেন্ডায় রয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যুটি।
২৭ থেকে ২৮ নভেম্বর নাইজারের রাজধানী নিয়ামে ৫৭ সদস্যের ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সিএফএম কাউন্সিলের ৪৭তম এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দুদিন ধরে রাজনৈতিক, মানবিক, অর্থনৈতিক, আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি–সম্পর্কিত বিষয়, গণমাধ্যম ও ওআইসির প্ল্যান অব অ্যাকশন-২০২৫ বিষয়ে আলোচনা করবেন।বিজ্ঞাপন
ওআইসিসি রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছে। জাতিসংঘে ওআইসির সব সদস্যই এই বিষয়ে আমাদের জোরালো সমর্থন করছে
এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ওআইসির মহাসচিব ইউসুফ আল-ওথাইমিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, কাউন্সিল অব ফরেন মিনিস্টার্স (সিএফএম) আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা মামলার জন্য তহবিল সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে। এ ছাড়া ফিলিস্তিন, সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই, চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদ, ইসলামোফোবিয়া ও ধর্মীয় মানহানির বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
ওআইসি সচিবালয় জানায়, সদস্য নয়—এমন রাষ্ট্রগুলোর মুসলিম সংখ্যালঘু ও সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি এবং সেই সঙ্গে সভ্যতা, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংলাপের প্রচার এবং অন্যান্য বিষয় কাউন্সিলের সামনে আসতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বাসসকে বলেছেন, ‘ওআইসিসি রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছে। জাতিসংঘে ওআইসির সব সদস্যই এই বিষয়ে আমাদের জোরালো সমর্থন করছে।’
মোমেন আশা করেন, রোহিঙ্গা সংকট মূলত সিএফএম অ্যাজেন্ডায় বড় দাগে আধিপত্য বিস্তার করবে, যা মিয়ানমারের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করবে এবং বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সিএফএমে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নাইজারে যাওয়ার এক দিন আগে ঢাকায় পরীক্ষায় তাঁর করোনা শনাক্ত হয়।
এ কে আব্দুল মোমেনের অনুপস্থিতিতে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারী আজ সিএফএমে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। তিনি ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থার (আইও) ডেস্কের মহাপরিচালক ওয়াহিদা আহমেদও রয়েছেন।
রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার আইনি লড়াইয়ে সমর্থন দেওয়ার জন্য সিএফএমে তহবিল সংগ্রহের প্রচার শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।বিজ্ঞাপন
এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ওআইসির সদস্য গাম্বিয়া রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে স্বেচ্ছায় আইসিজেতে গেছে। এই মামলা লড়ার জন্য আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। ঢাকা নিজেই গাম্বিয়াকে এই মামলার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করার পরিকল্পনা করেছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাসসকে বলেছেন, ‘আইসিজেতে মামলা পরিচালনার জন্য গাম্বিয়াকে সমর্থন করার জন্য আমরা আমাদের তহবিল ওআইসির কাছে বিতরণ করব। কারণ, এই মামলার জন্য আইনজীবী নিয়োগের পর তাদের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। ঢাকা এ ব্যাপারে জোরালো আবেদন জানাবে।’
বাংলাদেশের উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, গাম্বিয়ার মামলাকে সমর্থন করার জন্য ঢাকা এখন ওআইসির কাছে একটি তহবিল বিতরণ করেছে।
১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইনে দমন-পীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।