সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ ঘিরে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যবিধিতে কড়াকড়ি
একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশন বসতে যাচ্ছে আজ সোমবার (১৮ জানুয়ারি)। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেল সাড়ে ৪টায় অধিবেশন শুরু হচ্ছে।
অধিবেশনের প্রথম দিনে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নতুন বছরের প্রথম অধিবেশনে রেওয়াজ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভাষণ দেবেন। ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদিত হয়েছে। ভাষণে সরকারের সাফল্যসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হবে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সংসদে ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। সেই প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেবেন সরকার ও বিরোধীদলীয় সদস্যরা। আলোচনা শেষে কণ্ঠভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হবে।
সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা ছাড়াও অধিবেশনে বেশ কয়েকটি বিল পাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া নিয়মিত প্রশ্নোত্তর পর্ব ও অন্যান্য কার্যক্রম থাকবে। তবে অন্যান্য বছর এই অধিবেশনটি দীর্ঘ হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হবে। করোনা ঝুঁকির কারণে আগের অধিবেশনের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরিচালিত হবে।
এর আগে মুজিববর্ষ উপলক্ষে আহুত সংসদের বিশেষ অধিবেশনসহ গত ৪টি অধিবেশন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হয়। প্রতি কার্যদিবসে ৭০-৮০ জন সংসদ সদস্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। করোনা ঝুঁকি এড়াতে মাঝখানে গ্যাপ দিয়ে দিয়ে আসন বিন্যাস করা হয়। সংসদ অধিবেশন চলাকালে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হয়। এমনকি অধিবেশনে যোগদানের ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যসহ অন্যান্যদের করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত করা হয়।
সংসদ অধিবেশন পরিচালনায় একই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামী অধিবেশনও সংক্ষিপ্ত হবে। সেক্ষেত্রে অধিবেশন ১২ থেকে ১৪ কার্যদিবস চলতে পারে।
নূর-ই আলম চৌধুরী আরো জানান, অধিবেশনের প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের জন্য সাংবাদিকসহ স্বল্পসংখ্যক অতিথির উপস্থিতির সুযোগ রাখা হচ্ছে। অন্য দিনগুলোতে দর্শণার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকবে। সংসদ সদস্যরাও রোস্টার অনুযায়ী যোগদান করবেন এবং আলোচনায় অংশ নেবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদের ১১তম অধিবেশনকে সামনে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সংসদ ভবন, সদস্য ভবনসমূহ এবং সংসদ এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, সংসদ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি সরবরাহ, লিফট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সচল রাখা, সংসদ এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি, এসআইএস সিস্টেম সক্রিয় রাখাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিবেন তাই বাড়তি প্রস্তুতিও রয়েছে।
জাতীয় সংসদের অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরবর্তী অধিবেশন বসার বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর সংসদের ১০ অধিবেশন শেষ হয়। গত ৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া অধিবেশন ছিল সংসদের বিশেষ অধিবেশন। ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে ওই অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপর বিশেষ আলোচনা ও সাধারণ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ওই অধিবেশনের প্রথম দিনেও সাংবাদিকসহ কিছু সংখ্যক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।