করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরির যত লক্ষণ
গোটা বিশ্বের অনেক মানুষই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এখনো হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা সকলের সমান নয়। কারও অ্যান্টিবডির পরিমাণ বেশি, কারও আবার নেই বললেই চলে। তাদের ভাষায়, যাদের শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ বেশি তারা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও দ্রুত সেরে উঠছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারে এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গবেষকদের মতে, কারো শরীরে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কিনা তা কিছু লক্ষণের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এ বিষয়ে নতুন করে আরো তথ্য পাওয়া গেছে।
গবেষণার জন্য গবেষক দল আমেরিকার ১১৩ জন কোভিড-আক্রান্তের ওপর পরীক্ষা চালান। তাদের ভাষায়, যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কোভিডের চিকিৎসা করান, তাদের শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে। অন্যদিকে যারা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করান, তাদের শরীরে সেই অ্যান্টিবডির পরিমাণ তুলনায় কম থাকে। এ ছাড়াও বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা দেখে শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা কেমন তা বোঝা যায়। যেমন-
জ্বর: শরীরে যে কোনও ধরনের সংক্রমণ হলেই জ্বর আসে। কারণ শরীর নিজের উত্তাপ বাড়িয়ে সেই রোগের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করে। কোভিডের ক্ষেত্রেও তাই। এছাড়াও ভিসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, কোভিডের সময় শরীর যখন উত্তাপ বাড়িয়ে ফেলে, তখন তা দ্রুত হারে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। ওই গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, শরীরের কোথাও প্রদাহ হলেই জ্বর আসবে। কিন্তু কোভিডের ক্ষেত্রে প্রচণ্ড দ্রুত হারে অ্যান্টিবডি তৈরির সময়ও উত্তাপ বেড়ে যায়। ফলে যে সব কোভিড-আক্রান্তরা জ্বরে ভুগেছেন, তাদের অনেকেরই শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে ওই গবেষণাপত্রে।
ক্ষুধা কমে যাওয়া: যে কোনও ধরনের সংক্রমণেই ক্ষুধা কমে যায়। কোভিডের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। ক্ষুধা কমে যাওয়ার মানেও শরীর দ্রুত হারে অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, জ্বরের পাশাপাশি যদি কোনো কোভিড-আক্রান্তের ক্ষুধা কমে যায়, তা হলে ধরে নিতে হবে তার শরীর লড়াই করার জন্য বেশি পরিমাণে প্রস্তুত হচ্ছে।
পেটের সমস্যা: ডায়রিয়া বা পেটের সমস্যা কোভিডের অন্যতম লক্ষণ। যদিও ভিসকনসিনের গবেষক দল বলছে, এই লক্ষণের বহু ক্ষেত্রেই অর্থ হল শরীরে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। পরিসংখ্যান দিয়ে গবেষক দল জানিয়েছেন, কোভিড-আক্রান্তের মধ্যে যারা হাসপাতালে ভর্তি হন, তাদের পেটের সমস্যা সাধারণত বাড়ে না। কিন্তু যারা বাড়িতেই চিকিৎসা করান, তাদের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা বাড়তে পারে। গবেষক দল বলছেন, কোভিডের মধ্যে পেটের সমস্যা থাকলে ধরে নিতে হবে তার শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
পেট ব্যথা: গবেষকরা বলছেন, ডায়রিয়া বা পেটের সমস্যার মতোই পেট ব্যথার অর্থও হলো শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করছে।
তবে গবেষকরা এটাও বলছেন, এ বিষয়ে আরো গবেষণার পরই তারা এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবেন।