জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান
প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রটি সাজানো হয়েছিল একটু ভিন্নভাবে। সিনেমা জগতের তারকাদের নতুন-পুরনো ছবিতে ছেয়ে গিয়েছিল চারপাশ। যেদিকে চোখ গেছে সিনেমার তারকাদের ছবি ও পোস্টার।
আজ রোববার জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দেশের চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য এটিই সবচেয়ে বড় পুরস্কার। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে শিল্পীরা এই পুরস্কার গ্রহণ করেন। করোনার কারণে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমারো একটা দুঃখ থেকে গেল, করোনার জন্য সরাসরি এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। তারপরও যারা পুরস্কার পেলেন তাদেরকে অভিনন্দন। এ দেশের সিনেমার জন্য আমরা অনেক কাজ করেছি। আমাদের পরিবারের সদস্যরা শিল্প-সাহিত্য ভালোবাসেন। শেখ কামালের কথা তো সবার জানা। শেখ কামাল খেলার বাইরে নাটকের সঙ্গে জড়িত ছিল। এই শিল্পের মানুষদের কাছ থেকে অনেক আগে থেকেই দেখেছি। তাই তাদের জন্য ভালো কিছু করার ইচ্ছে অনেক দিনের, সেভাবেই কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্বের সিনেমা বেশি বেশি নির্মাণ হওয়া দরকার। তাহলে নতুন প্রজন্ম অনেক কিছু জানতে পারবে। একটি সিনেমা, নাটক, গান বা কবিতার মধ্যে দিয়ে অনেক কিছু জানা যায়। গভীরে প্রবেশ করা যায়। চলচ্চিত্র শিল্প ধ্বংস হয়ে যাক তা আমরা চাই না। আমরা চাই, আমাদের সিনেমা আগের সুনাম ফিরিয়ে আনুক। শিশুদের জন্য সিনেমা নির্মাণ হওয়ার প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ শিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান এবং তথ্য সচিব খাজা মিয়া উপস্থিত ছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ বলেন, চলচ্চিত্র জীবনের কথা বলে, সমাজের কথা বলে, দেশের কথা বলে। চলচ্চিত্র শিল্পের কথা ভেবে বঙ্গবন্ধু এদেশে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এক হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল সহসাই চালু হবে। যেখান থেকে এই শিল্পের মানুষ উপকৃত হবেন। শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টও হয়েছে। আরও অনেক কাজ হয়েছে এই শিল্পের জন্য এবং হওয়ার পথে।
শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন মেকআপ ম্যান মো. রাজু। পোশাক ও সাজসজ্জায় খন্দকার সাজিয়া আফরিন, শব্দগ্রাহক রিপন নাথ, চিত্রগ্রাহক সুমন কুমার নাথ সরকার, যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন রহমত উল্লাহ বাসু ও ফরিদ আহমেদ, সম্পাদক জুনায়েদ আহমেদ হালিম, সংলাপ রচয়িতা জাকির হোসেন রাজু, চিত্রনাট্য মাহবুবুর রহমান, কাহিনীকার মাসুদ পথিক। যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ গীতিকার পুরস্কার পেয়েছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ ও কবি কামাল চৌধুরী, যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ সুরকারের পুরস্কার পেয়েছেন প্লাবন কোরেশী ও তানভীর তারেক, শ্রেষ্ট গায়িকা মমতাজ বেগম ও ফাতেমা তুজ জোহরা ঐশী, শ্রেষ্ঠ গায়ক মৃণাল কান্তি দাশ, সংগীত পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান ইমন, নৃত্য পরিচালক হাবিবুর রহমান, শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী নাইমুর রহমান আপন ও আফরিন আক্তার, খল চরিত্রে অভিনেতা জাহিদ হাসান, পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেত্রী নার্গিস আক্তার, পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু, নারী ও জীবনের জন্য পুরস্কার গ্রহণ করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিবাহী পরিচালক। ‘যা ছিল অন্ধকারে’ প্রামাণ্য চিত্রের জন্য পুরস্কার গ্রহণ করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এসএম হারন অর রশীদ ও প্রযোজক আওয়াল চৌধুরী, শ্রেষ্ঠ পরিচালক তানিম রহমান অংশু, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ন ডরাই-এর জন্য প্রযোজক মাহবুবুর রহমান ও ফাগুন হাওয়ার প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর পুরস্কার গ্রহণ করেন।