গাবতলী ও মহাখালী টার্মিনাল ইজারা দিল ডিএনসিসি

প্রথমবারের মতো গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল ইজারা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত এ দুই টার্মিনাল থেকে ডিএনসিসি বার্ষিক ১২ কোটি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাবে।

ডিএনসিসির বর্তমান মেয়রের বিশেষ আগ্রহের কারণে এ দুটি টার্মিনাল ইজারা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। মঙ্গলবার ডিএনসিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গুলশানে ডিএনসিসির নগরভবনে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের কাছে ইজারাদাররা চেক হস্তান্তর করেন।

এর আগে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সময়ে নামমাত্র মূল্যে টার্মিনাল দুটি থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য আদায় সহযোগিতাকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ এক যুগেও এ আদায়ের জন্য নির্ধারিত টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়নি। এছাড়া আদায় সহযোগিতাকারীরা নানা অজুহাত দেখিয়ে ৩১ আগস্ট ২০২০ পর্যন্ত প্রায় ৪ কোটি টাকা ডিএনসিসিকে জমা দেয়নি।

এছাড়া এসব অনিয়ম দূর করার জন্য ডিএনসিসি মেয়র টার্মিনালগুলো উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ নেন। শুরুতে নানা বাধা-বিপত্তি, হুমকি থাকলেও কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে ডিএনসিসি মেয়রের দৃঢ় নেতৃত্বে ইজারার কার্যক্রম শেষ হয়।

চেক হস্তান্তরের পর মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল দুটি থেকে সেভাবে কোনো রাজস্ব আদায় করা যায়নি। আমি এসে দেখেছি এখানে অনেক আগে থেকেই গলদ ছিল। একজনকে আদায়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেখানে একটা ক্লজ ছিল যে, হরতাল বা বিভিন্ন কারণে যখন পরিবহন বন্ধ থাকবে, তখন ডিএনসিসিকে কোনো টাকা দিতে হবে না। এ সিদ্ধান্তগুলো ভুল ছিল। তারা তাদের পাওনা টাকা তো দেয়ইনি, বরং সিটি করপোরেশনের কাছে টাকা দাবি করেছে।

তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এ ধরনের অসম চুক্তি করা হয়েছিল। আমি বলেছি, এ ধরনের অসম চুক্তি আমরা মেনে নিতে পারি না। এর ফলে সিটি করপোরেশন রাজস্ব হারাচ্ছে।

তাই আমরা উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা দিয়েছি। আমরা যখন ইজারা দিতে গেলাম, আমাদের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। আমি বলেছি, কারও কথা শোনার দরকার নেই। নিয়ম অনুযায়ী দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হবে।

রাজস্ব আদায় সম্পর্কে আতিকুল ইসলাম বলেন, গত ১২ বছরে কমপক্ষে ১৫০ কোটি টাকা আদায় করা যেত। এখন ইজারাদারদের বাস টার্মিনালগুলোতে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার জন্য শর্ত দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ইজারা বাতিল হবে। আগের বিশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখা যাবে না। এ যে নতুন সিস্টেম পালন হতে যাচ্ছে, এভাবে আস্তে আস্তে রাজধানীতে পরিবর্তন আসবে।

এ চেক হস্তান্তরকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) মিজানুর রহমান, প্রধান ভান্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা সগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *