ওয়ানডে দলে তিন নতুন
কভিড-১৯ সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে চিরায়ত ১৫ জনের পরিবর্তে ১৮ জনের ওয়ানডে দল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। সেই দলের অধিনায়ক তামিম ইকবালই আছেন। তবে উল্লেখ নেই তাঁর ডেপুটির নাম। গত রাতেও সেই নামটি জানাতে পারেননি জাতীয় দলের সরাসরি অভিভাবক ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান।
‘আসলে এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। আমি এখন চট্টগ্রামে। কাল (আজ) ফিরে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সহ-অধিনায়কের নাম ঘোষণা করা হবে’—গত রাতে টেলিফোনে জানিয়েছেন আকরাম খান। নতুন বছরে ঘোষিত ওয়ানডে দলের রূপরেখায় ২০২৩ বিশ্বকাপকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন নির্বাচকরা। তারই অনুসরণে ভবিষ্যৎ অধিনায়কত্বও তামিমের সহকারী নির্ধারণে ভূমিকা রাখবেন নাকি দলের সিনিয়রদের কারো ওপর আস্থা রাখবেন, সে ব্যাপারটিও আলোচনার টেবিলে রাখছেন আকরাম, ‘কাল ঢাকায় ফিরি। এরপর এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত হবে বলে আশা করছি।’ এর মানে, ভবিষ্যৎ নাকি বর্তমানের হাত ধরে ভবিষ্যত্যাত্রা—সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি বোর্ডের নীতিনির্ধারক মহল।
প্রধান নির্বাচকও অবশ্য ২০২৩ বিশ্বকাপের রোডম্যাপ থেকে আপাতত সিরিজ বাই সিরিজ চিন্তার পথ ধরে বর্তমানে ফিরে এসেছেন গতকাল। দল ঘোষণার পর নতুনদের ওপর দীর্ঘ মেয়াদে আস্থা রাখার প্রশ্নের উত্তরে তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন মিনহাজুল, ‘২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে। এখন আমরা চিন্তা করছি সিরিজ বাই সিরিজ যাব।’ সেই ভাবনায় গত ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘোষিত স্কোয়াডের চারজন নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ওয়ানডের জন্য ঘোষিত দলে—মাশরাফি বিন মর্তুজা, শফিউল ইসলাম, আল আমিন হোসেন ও নাঈম শেখ। পরিবর্তে রয়েছেন তিন নবাগত—হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান।
এই তিনজনকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করার কথা বলেছেন মিনহাজুল, ‘(ভবিষ্যৎ) পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমরা তিনজন নতুন ক্রিকেটার নিয়েছি। এ সিরিজ থেকেই আমরা শুরু (ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা) করছি। ওদের তৈরি করা, টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে রেখে কাজ করানোর জন্যই নতুনদের রাখা হয়েছে।’ অবশ্য এ তিনজনের কারোর অন্তর্ভুক্তিই চমক নয়। পেসার হাসান মাহমুদ ও স্পিনার-অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে নৈপুণ্য দেখিয়ে নিজেদের দাবিও জানিয়ে রেখেছিলেন। তেমনি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের পেসার শরিফুলও নির্বাচকদের গুডবুকে নাম টুকে নিয়েছিলেন। তবে তিনজনের মধ্যে শরিফুলই একমাত্র, যিনি এই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ডাক পেয়েছেন।
ঘোষিত দলটি ভারসাম্যপূর্ণ হয়েছে বলে বিশ্বাস করেন মিনহাজুল, ‘টিমের কম্বিনেশন ভালো। ব্যাটিং-বোলিং সব দিক দিয়ে ভারসাম্য রাখা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এই দল আমাদের ভালো একটি সিরিজ উপহার দেবে।’
এদিকে নিয়মিত একাদশের বেশ কয়েকজনের অনুপস্থিতিতে উড়ে আসা ক্যারিবীয়দের ক্রিকেটশক্তি নিয়ে নানা রকম নেতিবাচক আলোচনা আছে। যদিও সেসবের সঙ্গে একমত নন প্রধান নির্বাচক, ‘আমরা খেলব ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে। আমাদের চেয়ে ওদের ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। বরং আমাদের জন্য ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে যাচ্ছি। এটা আমাদের জন্যও একটা চাপ হিসেবে কাজ করবে।’
এই ফেরার চ্যালেঞ্জে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাকিব আল হাসানের ফেরাকে অনুপ্রেরণাদায়ী মনে হচ্ছে মিনহাজুলের, ‘বিশ্বের ১ নম্বর অলরাউন্ডারের (সাকিব) ফেরাটা অবশ্যই ভালো খবর। দলের সঙ্গে ও নিজের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করবে, অনুপ্রাণিত করবে দলকে। আর ও নিজেও একদম ফ্রেশ হয়ে ফিরছে। তাই সাকিবের কাছ থেকে অনেক ভালো পারফরম্যান্স আশা করছি।’