ম্যারাডোনার শেষ বিদায়ে পুলিশের সঙ্গে ভক্তদের সংঘর্ষ
আবেগ বাঁধ মান মানছে না। ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে কেউ যেতে দিতে রাজি নয়। তবু যেতে দিতে হয়, এটাই মহাকালের নিয়ম। কিন্তু ভালোবাসার মানুষের ক্ষেত্রে এত সব যুক্তি–তর্ক, নিয়মকানুন চলে!
ডিয়েগো ম্যারাডোনার শেষ বিদায়েও এমন দৃশ্যের অবতারণা ঘটল। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে ম্যারাডোনা–ভক্তদের।
ম্যারাডোনার শেষ বিদায়ে ঢল নেমেছিল ভক্তদের। পড়েছিল কান্নার রোল। চোখের জলে ভিজেছেন সবাই। এর মধ্য দিয়েই আর্জেন্টিনার প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস কাসা রোসাদা থেকে সমাধিক্ষেত্র বেল্লা ভিস্তার দিকে যাত্রা করে ম্যারাডোনার কফিনবহনকারী গাড়ি।
পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে হয়েছে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। এরপর সমাহিত করা হয় আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিকে।
তার আগে বুয়েনস এইরেস শহরে সিটি স্কয়ার প্লাজা দে মায়ো থেকে সারি বেঁধে ম্যারাডোনাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দাঁড়িয়ে যান ভক্তরা। তখন লোকে লোকারণ্য ছিল পুরো এলাকা।
সাধারণ জনতার জন্য ম্যারাডোনাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সবার আগে ম্যারাডোনাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁর পরিবার ও ঘনিষ্ঠরা। এরপর জনতাকে সুযোগ দেওয়া হয়।
তবে ততক্ষণে ঢল নামা ভক্তদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেয়েছে বুয়েনস এইরেস পুলিশ। হট্টগোল ও উত্তেজনা প্রশমনে প্রস্তুত ছিল দাঙ্গা পুলিশ।
কিন্তু পুলিশ চাপ সামলাতে পারেনি। ’৮৬ বিশ্বকাপ কিংবদন্তিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে পুলিশের সঙ্গে লেগে যায় ভক্তদের।
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘ক্লারিন’ ও সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ভক্তদের উত্তেজনা প্রশমনে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তার ভিডিও।
ভক্তরাও কম যাননি। তাঁরা বেড়া ভেঙে কিংবা ডিঙিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন ম্যারাডোনাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সীমানার মধ্যে। বোতল ও বেড়া তুলে ছুড়েও মেরেছেন কেউ কেউ।
এদিকে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির মৃত্যুর তদন্ত দাবি করেছেন আইনজীবী মাতিয়াস মোরলা। তাঁর অভিযোগ, ম্যারাডোনার মৃত্যুর আগে ১২ ঘণ্টায় নাকি তাঁর কাছে যাননি কোনো চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স আসতেও আধা ঘণ্টার মতো দেরি হয়েছে।
সবকিছুর তদন্তের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মোরলা, ‘এটা ব্যাখ্যাতীত যে ১২ ঘণ্টা আমার বন্ধুকে কেউ দেখতে যায়নি, কোনো স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাঁর আশপাশে ছিল না। অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছাতে আধা ঘণ্টার বেশি দেরি করেছে। এটা শাস্তি পাওয়ার মতো বোকামি।’