এরশাদই সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনের আইন করেছিলেন: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি (জিএম কাদের) বলেছেন, ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের আইন করেছিলেন। অনেক ক্ষেত্রেই তা বাস্তবায়ন হলেও উচ্চ আদালতে এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ডিজাইন অনুযায়ী তৈরি করে ভাষাশহিদদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে রোববার আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে সংসদীয় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একদিকে বৈষম্য বেড়েছে, অপরদিকে জবাবদিহিতা নেই কোথাও। স্বাধীনতার আগে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বৈষম্য ছিল। কিন্তু ’৯০ সালের পর থেকে দেশের মানুষের সঙ্গে বৈষম্য করছেন যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকেন। দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে দলীয়করণ চলছে। উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছেন। যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকেন তারাই চাকরি ও ব্যবসায় সুযোগ পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ বৈষম্য থেকে মুক্তি চায়। তাদের অধিকার পেতে চায়। আইনের শাসন চায় তারা। ভাষা আন্দোলন আমাদের অন্যায়-অবিচারের কাছে মাথা নত না করে প্রতিবাদ করতে শিক্ষা দেয়। জাতীয় পার্টি প্রতিটি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের পক্ষে আপসহীন প্রতিবাদ করবে। গণমানুষের মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বে জাতীয় পার্টি।
সভায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু সৈয়দপুরে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের ওপর গত শনিবার রাতে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ১৯৫২ সালে মানুষের প্রশ্ন ছিল, আমরা কোন ভাষায় কথা বলব? আর এখন মানুষের প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি কথা বলতে পারব? দেশের মানুষ আজ কথা বলতে পারছে না, গণমাধ্যম সত্য কথা তুলে ধরতে পারছে না। এটা লজ্জাজনক, দুঃখজনক। অন্যায়-অবিচার আর লুটপাটের গণতন্ত্র থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি।
সভায় আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, জাতীয় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, হেনা খান পন্নি, ভাইস চেয়ারম্যান এইচএম শাহরিয়ার আসিফ, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ইকবাল হোসেন তাপস।
উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদের, উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি, ড. নুরুল আজহার শামীম, হারুন আর রশীদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল দাস, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন, এনাম জয়নাল আবেদিন, সাইফুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন তোতা, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাব্বির আহমেদ, আলহাজ আব্দুর রাজ্জাক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুলতান মাহমুদ, এমএ রাজ্জাক খান, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, মিজানুর রহমান মিরু।
আলোচনা সভার আগে ও পরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদেরের তত্ত্বাবধানে এবং সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদের উপস্থাপনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সদস্যরা।