বঙ্গবন্ধুর হত্যা-উদযাপন ও প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবার নিয়ে নাশকতামূলক বক্তব্য প্রকাশ ও কটূক্তিঃ দৈনিক নবযুগ এর বিরূদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

গত ২৩শে সেম্পটেম্বর লক্ষীপুরের চীফ জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী) আদালতে ৪৭ জন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেশে অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে লেখা ও বিভেদ-সৃষ্টিকারী মতামত প্রকাশের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২১, ২৫, ২৯, ৩১ ও ৩৫ ধারায় এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলার নাম্বার ৪৭৭/২০২১। মামলা দায়েরের পর মামলার আমলী শুনানী সম্পন্ন হয় গত ৩রা অক্টোবরে যে শুনানীতে মামলার নথি ও আলামত লক্ষীপুর চীফ জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী) আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ বেলায়েত হোসাইন (ক্ষমতাপ্রাপ্ত) পর্যালোচনা করে মামলা আমলে নেন এবং মামলা সংক্রান্ত প্রথম আদেশ জারী করেন। আদালত সূত্রে জানা যায় মামলার বাদী  মোঃ হৃদয় কাজী বর্তমানে লক্ষীপুরের হাজিরহাটে বাসিন্দা; তার আদিবাড়ী নড়াইল। তিনি আওয়ামী লীগের একজন তৃণমূল পর্যায়ের সক্রিয় কর্মী ।  জনাব মোঃ হৃদয় কাজী তার অভিযোগে জানান – দৈনিক নবযুগ-এ গত ২৮শে মে প্রথম প্রকাশিত “বাংলাদেশে বিপন্ন বাক-স্বাধীনতা,আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও পুতুল বিচারবিভাগ প্রসঙ্গে”  প্রতিবেদনে (প্রতিবেদনটি সংশোধিত হয়েছে আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে) বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে কেন্দ্র করে হুমকিনাশক, আক্রমণাত্মক ও আগ্রাসী মন্তব্য ছাঁপিয়ে দেশে অস্থিতিশীল ও অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। 

এই মামলায় দৈনিক নবযুগের সম্পাদক ইসরাত রশীদ এই মামলার মূল আসামী দেখানো হয়। উল্লেখ্য এই সম্পাদকের এবং এই পত্রিকার  বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই আরো বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এবং এই পত্রিকার মাধ্যমে অনেক দিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনককে  নিয়ে কটূক্তি করেছেন বলে জানা যায়। মামলা দায়ের-এর দিন এই মামলাকে ঘিরে আদালতে উত্তেজনা দেখা যায় এবং স্থানীয় আওয়ামী কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গনে ভীড় করেন। আরো জানা যায় যে এই উক্ত পত্রিকাটি দীর্ঘদিন ধরেই জাতির জনক ও প্রধানমন্ত্রী এবং জনতার আবেগের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কদর্য ভাষায়  আক্রমণ করে লেখালেখি চালিয়ে আসছে। এই মামলাতে সর্বমোট ৪৭ জন ব্যাক্তিকে আসামী করা হয় । অভিযুক্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন – ইসরাত রশিদ ( সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), জনি জোসেফ ডি কস্তা(সহ-সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), নূর মুহাম্মাদ (সিনিয়র উপদেষ্টা, দৈনিক নবযুগ), আলী আমিন (প্রকাশক, দৈনিক নবযুগ), পীরজাদা তানভীর আহমেদ ,  মোহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম জায়গীরদার, মোঃ আব্দুল রাজ্জাক, মোঃ মাসুম সাজ্জাদ, আরিফুল হক আরিফ, মোঃ শহীদুল ইসলাম, মোঃ জাকির হোসাইন, মোঃ রাজিম হোসাইন, শিপলু কুমার বর্মন, মুসা আহমেদ জায়গীরদার, মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, মুকিত চৌধুরী, আবু সাঈদ, মোঃ আল-আমিন কায়সার, এম.ডি মারাজ মিয়া, এম.ডি শাইম, মোঃ মিজানুর রাহামান, আহসানুল কবির (৩৫), সামিউজ্জামান সিদ্দীক (৪০), এম.ডি সাব্বির হোসাইন, এম.ডি জহিরুল ইসলাম, এমডি তোফায়েল হোসাইন, আল মাহফুজ , এম.ডি ওবায়দুর রহমান খান, মোঃ আরাথ হোসেন রনি, উম্মা কুলসুম নার্গিস বানু, নুরুল ফারুক শাকের, মোহাম্মাদ নিজামুল হক, মোহাম্মদ ফাহিদুল আলম, এমডি কানজিদ হাসান সহ আরো অনেকে। 

এই ব্যাপারে বাদী মোঃ হৃদয় কাজীর কথা যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এই দৈনিক নবযুগ হলো বাংলাদেশ শত্রু। এই পত্রিকার লেখকেরা প্রায়শঃ জাতির জনক, শেখ পরিবার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নানাভাবে অপমান ও অপদস্ত করে যায় তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি কিভাবে তারা দেন? ১৯৭৫ এর জাতির জনকের পরিবারের নারকীয় হত্যাযজ্ঞকে কিভাবে তারা সঠিক বলেন?”

এই ব্যাপারে মূল আসামীদের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। এদিকে এই ঘটনার রেশ ধরে গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ছিলো অত্যন্ত সরব। সেখানে নানাবিধ মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

এই ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এই ব্যাপারে কোনো রকমের মন্তব্য করা হবে না বলে আমাদের প্রতিবেদককে জানান।