কক্সবাজারে ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-২ এর বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা। একই সাথে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৭ ধারায় তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রমকারাদণ্ড এবং ৯(১) ধারায় ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।

পাশাপাশি মামলায় আরোপিত অর্থদণ্ড (ক্ষতিপূরণ) আদায় করতে কক্সবাজার জেলা কালেক্টরকে আদেশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও নিলাম বিক্রয় করে বিক্রয়লব্দ অর্থ আদালতে জমা দিতে জেলা কালেক্টরকে নির্দেশনা দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-২ এর বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. নাসির উদ্দিন প্রকাশ আশেক কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের বৈদ্দের পাড়া এলাকার মো. শামসুল আলমের ছেলে। রায়ের সময় আসামি নাসির উদ্দিন আশেক কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় শোনে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (স্পেশাল পিপি) অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. রেজাউর রহমান রেজা তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, মামলায় বাদী, ভিকটিম, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদালত। সাক্ষীদের সাক্ষ্যে আসামি নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পক্ষ আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০এর ৭ এবং ৯(১) ধারায় এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর রাত অনুমান সাড়ে সাতটার দিকে আসামি নাসির উদ্দিন বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে মেয়ে জোসনাকে (১৩) (ছন্দনাম) অপহরণ করে স্থানীয় ময়না বাপের বাড়ি এলাকায় নির্জন স্থানে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে জোসনাকে বিবস্ত্র করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা বাদী (নাম পরিচয় গোপন রাখা হলো) হয়ে একই দিনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারায় নাসির উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে কুতুবদিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর তদন্ত কর্মকর্তা কুতুবদিয়া থানার তৎকালীন এসআই জয়নাল আবেদীন ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র (চার্জসিট) দেন। আদালত অভিযোগ পত্র আমলে নিয়ে একই বছর ২৪ অক্টোবর আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বাদী, ভিকটিমসহ ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) চূড়ান্ত এ রায় প্রদান করেন আদালত।

আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. কাশেম আলী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *