সব কিছু বলা যায় না

সব কিছুই ঠিকঠাক চলছে। সারা বিশ্ব কোভিড -১৯ এর সেকেন্ড ওয়েভ নিয়ে তটস্থ। আর আমরা বীর পুরুষের মত নিয়মের তোয়াক্কা না করে জীবনযাপন করছি। কারণ আমাদের সচেতনতার অভাব। আমরা করোনাকে পাত্তা দিতে চাই না। গরীবের কাছে এটা বড়লোকের অসুখ। তার চেয়েও বড় বিষয় হলো, দেশের সাধারণ মানুষের সামনে বিগত সময়ের করোনার ভাইরাসের ভয়াবহতার কোন তথ্য উপাত্ত নেই। তাই ‘আমাদের কিছু  হবে না’ – এমনটাই মনে করে বেশির ভাগ মানুষ।  

আসলে এদেশের মানুষ সহজে সব কিছু ভুলে যায়। আর এখনতো কোনভাবে খেয়েপরে জীবন চালানোটাই মুখ্য বিষয়। কেননা বাজারে জিনিসপত্রের মূল্য লাগামহীন। এসব নিয়ে কিছু বলার নেই। আর বলেই বা কি হয়। ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি মানুষ।দেশের জনগণ অনিয়ম, দুর্নীতিকে যেমন মেনে নিচ্ছে তেমনিভাবে রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে করে না উচ্চবাচ্য। এখানেও উত্তর একটাই, ‘ কি হবে এসব করে।’ এমন উত্তরের আড়ালের কারণ খুঁজতে গেলে মনে হয়, বাঙ্গালীর শিরদাঁড়া ভেঙ্গে যাচ্ছে ক্রমশ। অনিয়ম অন্যায় আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ কথা বলতে ভয় পায়। রাজনৈতিক  আর প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় এসব অনৈতিক ব্যক্তিরা সমাজ, দেশকে গ্রাস করে রেখেছে অক্টোপাসের মত। তাদের শক্তির দাপটের পরাজিত হচ্ছে সমাজের নৈতিক চিন্তা। প্রতিবাদ করতে গেলে হতে হয় হেনস্তা।

রাজনৈতিকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর সিদ্ধান্ত হলেও তার প্রয়োগ কতটা হয় তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ সব কিছু নিয়ে কথা বলার মানুষের বড় অভাব। সমাজের ভালো  মন্দ নিয়ে আলোচনা সমালোচকরা যা বলেন তা মিডিয়ার টকশোতে সীমাবদ্ধ। সুশীল  সমাজ বলে দাবি করা ব্যক্তিরা সুখ্যাতিতে থাকে ব্যতিব্যস্ত। চেক এন্ড ব্যালেন্সের রাজনীতিতে এখন নিজের ভালো  থাকাটাই  যেন জরুরি। 

করোনা ভাইরাসের টিকা হয়ত একদিন মানুষের হাতে আসবে। আর পরাজিত হবেও এ ভাইরাস। কিন্তু  সমাজে অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি ও  রাজনৈতিক ঔদ্ধত্যপনা আচরণের ক্যান্সার থেকে মুক্তির পথ আসবে কি করে তা জানে না জনগণ। কারণ এ দেশের মানুষের কাছে অতীতের প্রতিবাদ, লড়াই  সবই কেবল এখন ইতিহাস।

লেখক: কলামিস্ট 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *